Tuesday, July 30, 2013

১৩টি জেলায় তৃণমূল, বাম-কংগ্রেসের দখলে একটি

১৩টি জেলায় তৃণমূল, বাম-কংগ্রেসের দখলে একটি
এই সময়: ২০০৮-এর পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে পরির্বতনের যে বৃত্ত আঁকা শুরু হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ হল ২০১৩-য়। বিধানসভার পর গ্রাম বাংলার রায়ও গিয়েছে তৃণমূলের পক্ষে। ১৭টির মধ্যে ১৩টি জেলায় ঘাসফুল ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই প্রকাশ পেল তৃণমূল স্তরেও জনগণের মন জয় করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। শুধুমাত্র একটি করে জেলা পরিষদই বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের দখলে। জেলা পরিষদের মোট ৪০২টি আসন দখল করেছে তৃণমূল, ১২৭টি বামফ্রন্ট এবং ৪৩টি কংগ্রেস। তিনটি আসনে অন্যান্য দলগুলি জয়ী।

যে ১৩টি জেলায় তৃণমূল জয়ী হয়েছে, সেগুলি হল, বাঁকুড়া, বর্ধমান, বীরভূম, কোচবিহার, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পুরুলিয়া, দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর। এই ১৩টির মধ্যে অবশ্যিই উল্লেখযোগ্য জয় এসেছে বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূমে। বামেদের শক্ত ঘাঁটি এই তিন জেলাকেও নিজের দখলে নিয়েছে তৃণমূল। বর্ধমান জেলা পরিষদের ৭৫টি আসনের মধ্যে ৬১টি তৃণমূলের দখলে। ১২টিতে কাস্তে-হাতুড়ি-তারা। সুশান্ত ঘোষের সাম্রাজ্যের ৬৭টির মধ্যে ৬৪টি আসনেই এখন সবুজ বিপ্লব। একটিকেই আঁকড়ে ধরে রাখতে পেরেছে বামফ্রন্ট। আর বীরভূমের ৪২টি আসনের মধ্যে ২৬টির লাল রঙ ফিকে পড়েছে। এ সবই গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে। ১৩টিতে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস দু'টি আসনেই নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে পেরেছে। এদিকে সিংহের গর্জনেও কান দেয়নি কোচবিহারের আমজনতা। আবার কোচবিহারের যে সমস্ত অংশে কংগ্রেসের প্রাধান্য, সেখানকার মানুষও 'হাত' ছেড়ে দিয়েছে। কোচবিহারের ৩৩টি আসনের সামগ্রিক ফল-- তৃণমূল ২৭, বামফ্রন্ট ৬, কংগ্রেস ০। বলা বাহুল্য কোচবিহারের যে অংশগুলিতে কংগ্রেসের আধিপত্য ছিল, তা-ও এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিশ্চিহ্ন হয়েছে।

এছাড়া বাঁকুড়ার ৪৬টির মধ্যে ৪১টি আসনে জয়ী তৃণমূল, ৫টিতে বামফ্রন্ট। শিশির-শুভেন্দুর পূর্ব মেদিনীপুরের ৬০টি আসনের মধ্যে ৫৪টিতে ফুটেছে ঘাসফুল। মাত্র ৬টি আসন গিয়েছে বামফ্রন্টের দখলে। হুগলির ৫০টির মধ্যে ৪৫টি তৃণমূল ও পাঁচটি আসনে বামফ্রন্ট। হাওড়ার ৪০টির মধ্যে ৩৪টি আসনে তৃণমূল এবং ৬টিতে বামফ্রন্ট। নদিয়ার ৪৭টি আসনেক মধ্যে ২৫টিতে তৃণমূল, ২১টিতে বামফ্রন্ট এবং একটিতে কংগ্রেস। উত্তর ২৪ পরগনার ৫৭টির মধ্যে ৩৭টিতে তৃণমূল, ২০টি আসনে বামফ্রন্ট। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৮১টির মধ্যে ৫৫টিতে তৃণমূল এবং ২৬টিতে বামফ্রন্ট। পুরুলিয়ার ৩৮টি আসনে ৩২টিতে তৃণমূল, ২টিতে বামফ্রন্ট এবং ৪টিতে কংগ্রেস। দক্ষিণ দিনাজপুরের ১৮টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে তৃণমূল এবং ৪টিতে বামফ্রন্ট।

বামফ্রন্টের ঝুলিতে গিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ। জেলার ৩৭টি আসনের মধ্যে মাত্র চারটিতে জয়ী তৃণমূল, ২৭টিতে বামফ্রন্ট এবং ২টি আসন অন্যান্যদের দখলে।

এদিকে ত্রিশঙ্কু হয়েছে দু'টি জেলা পরিষদ। অধীর রঞ্জন চৌধুরী নিজের দুর্গ বজায় রাখলেও, দীপা দাসমুন্সি এবং গনি খান পরিবার উত্তর দিনাজপুর এবং মালদা ধরে রাখতে পারেননি। এই দুই জেলাতেই ত্রিশঙ্কু। উত্তর দিনাজপুরের সামগ্রিক ফলাফল-- তৃণমূল ৫, বামফ্রন্ট ১৩ এবং কংগ্রেস ৮। মালদার স্কোর কার্ড-- তৃণমূল ৬, বামফ্রন্ট ১৬ এবং কংগ্রেস ১৬। তৃণমূল এবং কংগ্রেস জোট ভাঙার পর এই দুই জেলার ভোটও ভাগাভাগি হয়েছে। যার ফায়দা তুলেছে বামফ্রন্ট। তাই কংগ্রেস আধিপত্য বিশিষ্ট এই দুই জেলায় বামেদের ফলাফল অপেক্ষাকৃত ভালো।

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcom

Website counter

Census 2010

Followers

Blog Archive

Contributors