Tuesday, October 7, 2014

আরেক ব্রিটিশ ত্রাণকর্মীর শিরচ্ছেদ প্রকাশিত ভিডিওতে এবার সাবেক মার্কিন সেনা রেঞ্জারকেও হত্যার হুমকি

আরেক ব্রিটিশ ত্রাণকর্মীর শিরচ্ছেদ
প্রকাশিত ভিডিওতে এবার সাবেক মার্কিন সেনা রেঞ্জারকেও হত্যার হুমকি
যুক্তরাজ্যের আরেক ত্রাণকর্মী ও ট্যাক্সিচালক এ্যালান হেনিংয়ের শিরচ্ছেদের ভিডিও প্রকাশ করেছে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ইউটিউবে শুক্রবার ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এই হত্যাকাণ্ডের তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ভিডিওতে আরেক বন্দী মার্কিন সাবেক সামরিক রেঞ্জার ও ইরাক যুদ্ধফেরত সেনাকে শিরচ্ছেদের হুমকি দেয়া হয়েছে। ভিডিওটি প্রকাশের পর পরই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে ব্রিটিশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকার। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট ও বিবিসি অনলাইনের।
হেনিংকে নিয়ে চারজনকে হত্যার ভিডিওটি প্রকাশ করল আইএস এবং একই জঙ্গী এ বন্দীর শিরচ্ছেদ করেছে। এই সংগঠনটি এর আগে দুই মার্কিন সাংবাদিক ও এক ব্রিটিশ ত্রাণকর্মীকে হত্যা করেছে। ব্রিটেনে 'জিহাদী জন' নামে পরিচিত ওই জঙ্গী এবারও ভিডিওর শেষে পিটার এ্যাডওয়ার্ড ক্যাসিং (২৬) নামে ওই মার্কিনীকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দেইর আল-জোর থেকে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর তাকে অপহরণ করা হয়। ক্যাসিংয়ের পরিবার জানায়, তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন এবং তার নাম এখন আবদুল রহমান ক্যাসিং। ভিডিওতে ওই জঙ্গী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে উদ্দেশ করে বলেছেন, আপনি সিরিয়ায় আমাদের লোকদের ওপর বোমা হামলা শুরু করেছেন। এর ফলে আমরাও আপনাদের লোকদের ঘাড়ে হামলা অব্যাহত রাখব। ওই ভিডিওতে কালো পোশাক পরা এক জঙ্গীর পাশে মরুভূমিতে কমলা জামা পরা ৪৭ বছর বয়সী হেনিংকে হাঁটুগেড়ে বসে থাকা অবস্থায় দেখা গেছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের দুই সাংবাদিক ও এক ব্রিটিশ ত্রাণকর্মীর শিরচ্ছেদের প্রকাশিত ভিডিওতেও এই একই ধরনের দৃশ্য ছিল। শিরচ্ছেদের আগের ভিডিওগুলোর মতো এই ভিডিওতেও নিহত হওয়ার আগে হেনিং একটি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। ওই বক্তব্যে তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের পার্লামেন্ট ইসলামিক স্টেটের ওপর হামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাই ব্রিটিশ জনগণের অংশ হিসেবে আমাকে এখন ওই সিদ্ধান্তের মূল্য দিতে হবে। এরপর ব্রিটিশ উচ্চারণে ওই জঙ্গী ক্যামেরনকে উদ্দেশ করে বলেন, ক্যামেরন, আপনার হাতে ডেভিড হেইন্সের রক্ত লেগে আছে। এ্যালান হেনিংকেও জবাই করা হবে, তবে এবার তার রক্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাতে লেগে থাকবে। উত্তর ইংল্যান্ডের সেলফোর্ডের বাসিন্দা ৪৭ বছর বয়সী হেনিং পেশায় একজন ট্যাক্সিচালক ছিলেন। গত ডিসেম্বরে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা সামগ্রী বহনকারী একটি ত্রাণবহর থেকে বন্দুকধারীরা তাকে অপহরণ করেছিল। এর পরে তার পরিবারের সদস্যরা হেনিংকে মুক্তি দেয়ার জন্য জঙ্গীদের কাছে আবেদন জানান। তবে জঙ্গীরা তাতে কোন সাড়া দেয়নি। 
ক্যামেরন শুক্রবার রাতে টুইটারে বলেছেন, এই সন্ত্রাসীরা যে কতটা বর্বর ও বীভৎস আইএসের হাতে এ্যালেন হেনিংয়ের নৃশংস হত্যাকা- তারই প্রমাণ। এই হত্যাকারীদের ধরতে ও বিচারের আওতায় আনতে আমরা সবই করব। আমার সমবেদনা হেনিংয়ের স্ত্রী ও তার সন্তানদের সঙ্গে রয়েছে। প্রেসিডেন্ট ওবামা এক বিবৃতিতে বলেছেন, আইএসের হাতে যুক্তরাজ্যের নাগরিক এ্যালান হেনিংয়ের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আইএসকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করতে বড় একটি জোটের মিত্র ও অংশীদার হিসেবে আমরা আমাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া অব্যাহত রাখব। কমলা রংয়ের পোশাক পরা ক্যাসিং ওই ভিডিওতে কোন কথা বলেননি। ২০০৭ সালে ইরাকে চার মাস কাজ করার পর শারীরিক সমস্যার কারণে তিনি চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। এর পর তিনি জরুরী চিকিৎসা কর্মী হিসেবে প্রশিক্ষণ নেন। সিরিয়ায় চলা সংঘর্ষে আহতদের সহায়তা করতে তিনি লেবানন, তুরস্ক ও সিরিয়ায় কাজ করেন। তাঁর বাবা ও মা এ্যাড ও পলা ক্যাসিং এক বিবৃতিতে বলেন, হেনিংয়ের পরিবার, আমাদের ছেলে এবং মধ্যপ্রাচ্য ও সারা বিশ্বে যত নিরাপরাধ বন্দী আছে তাঁদের মুক্তির জন্য আমরা বিশ্ববাসীকে প্রার্থনা করার অনুরোধ করছি।

No comments:

Post a Comment

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...

Welcom

Website counter

Census 2010

Followers

Blog Archive

Contributors